শিক্ষার হেরফের-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

শিক্ষার হেরফের-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

by Aysha Akter Soha -
Number of replies: 0

পুঁথি গত বিদ্যা, পরহস্থে ধন ! নহে বিদ্যা নহে ধন ,হলে প্রয়োজন!! জ্ঞান যখন সীমিত আকারে চর্চা করা হয় এবং তা কেবল হাতে গোনা কয়েকটা বই এর মাধ্যমে তখন তা মানুষের সত্তার খোরাক দিতে পারে না। সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে আমরা অভ্যস্থ হয়ে গেছি যান্ত্রিক জীবনধারা তে ! এক্ষণ মানুষ লিখা পড়া বলতে বুঝে এমন এক কবজ যা যত তাড়াতাড়ি সাধন করতে পারবে ঠিক তত তাড়াতড়ি বিলাসিতা, চাকচিক্য তাকে হাত ছানি দিয়ে ডাকবে ! নাই বা হোক আমার মনস্তাত্ত্বিক অগ্রগতি !রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘ শিক্ষার হেরফের ' প্রবেন্ধর মাধ্যমে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার রুপ তুলে ধরেছে ৷রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ,শিক্ষা নিয়ে অনেক ভেবেছেন। তার বয়স যখন ৩১ বছর, তখন তিনি ‘শিক্ষার হেরফের’ নামে একটি প্রবন্ধ লেখেন। তিনি বলেন বাল্যকাল হতে যদি ভাষাশিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ভাবশিক্ষা হয় এবং ভাবের সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত জীবনযাত্রা নিয়মিত হতে থাকে, তবেই আমাদের সমস্ত জীবনের মধ্যে একটা যথার্থ সামঞ্জস্য হতে পারে- আমরা বেশ সহজ মানুষের মতো হতে পারি এবং সকল বিষয়ের একটা যথাযথ পরিমাণ ধরতে পারি| ঠিক কতটুকু শিক্ষা অর্জন করলে শিক্ষিত বলা হয়? শিক্ষার নির্দিষ্ট কোনো সংঙ্গা নেই।প্রতিনিয়ত আমরা শিক্ষা অর্জন করছি। মনুষ্যত্ব বিকাশ ঘটানোর জন্য শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে পাঠ্যপুস্তকের বাহিরের জ্ঞান অর্জন অত্যাব্যশকীয়। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় শিশুকাল হতে বই পুস্তক কেবল মুখস্থ করানো হয় যেনো বড় হয়ে ভালো অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হয়, তবে সেই পুঁথিগত বিদ্যা অর্জন নিরর্থক। অর্জিত বিদ্যা যদি মানব কল্যাণে কাজে না লাগে তবে সেই বিদ্যার কোনো সার্থকতা নেই। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো মনুষ্যত্ব অর্জন। বোর্ড বইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়া সাহিত্য চর্চা করা উচিত। কিন্তু বর্তমানে পিতা-মাতারা বাচ্চাদের এসব পড়তে দেয় না। ফলে তারা মানসিক বিকাশে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তারা প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে না । এদেশের বেশির ভাগ বাবা- মায়েরা মনে করে তাদের ছেলেমেয়েরা পাঠ্যবই ব্যাতীত অন্য বই পড়া মানে হচ্ছে সময় নস্ট করা।যাতে তা না করতে পারে এ জন্য পাঠ্যবই ছাড়া তাদের অন্য কোন বই পড়তে বাধা দেওয়া হয়। প্রতিটি মানুষের উচিৎ প্রকৃত শিক্ষা লাভ করা এতে করে তার জ্ঞান এর পরিমানও বাড়বে। একজন মানুষ ঠিক তখনই সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হয় যখন তার জ্ঞান- ধারণা শুধু মাত্র পাঠ্য বই বা উদ্দেশ্য মূলক শিক্ষাগ্রহণ সহ বাইরের জগৎ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান বা ধারনা নিতে সক্ষম হয়। শিক্ষা শুধু অর্থ উপার্যনের পথ না হয় এবং তাতে যেন জ্ঞান লাভ হয় এই দিকটাও খেয়াল রাখা উচিৎ প্রতিটি মানুষের। রবীন্দ্রনাথ সবাইকে এটাই বুঝাতে চেয়েছেন তার " শিক্ষার হের ফের প্রবন্ধ দ্বারা।